মাছের মাথার কালিয়া
মাছের মাথার কালিয়া একটি জনপ্রিয় বাঙালি পদ, যা ভাতের সঙ্গে খুবই সুস্বাদু লাগে। নিচে মাছের মাথার কালিয়া রান্নার রেসিপি বাংলায় দেওয়া হলো:
উপকরণ:
- রুই মাছের বড় মাথা – ১ টি
- পেঁয়াজ কুচি – ২ টি
- আদা বাটা – ১ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
- টমেটো কুচি – ১ টি
- শুকনা মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- জিরা গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
- লবণ – স্বাদমতো
- সরিষার তেল – পরিমাণমতো
- কাঁচা মরিচ – ২-৩ টি (ফালি করে কাটা)
- ধনেপাতা – সাজানোর জন্য
প্রণালী:
1.
প্রথমে রুই মাছের মাথা ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর মাছের মাথায় লবণ ও হলুদ মাখিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন।
2.
একটি কড়াইতে সরিষার তেল গরম করে মাছের মাথা ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে মাছের মাথা তুলে রেখে দিন।
3.
এবার ওই একই কড়াইতে আরেকটু তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
4.
পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে, তাতে আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, শুকনা মরিচ গুঁড়ো, এবং টমেটো কুচি দিয়ে মশলাগুলো ভালোভাবে কষিয়ে নিন।
5.
মশলা কষানো হয়ে গেলে, এতে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ফুটতে দিন।
6.
পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছের মাথা দিয়ে দিন এবং ১০-১২ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না হতে দিন।
7.
রান্না শেষে গরম মশলা গুঁড়ো এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে ২-৩ মিনিট ঢেকে রাখুন।
8.
নামানোর আগে উপরে ধনেপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন সুস্বাদু মাছের মাথার কালিয়া।
মাছের মাথার কালিয়ার উপকারীতা
মাছের মাথার কালিয়া শুধু সুস্বাদু নয়, এর বেশ কিছু পুষ্টিগুণও রয়েছে। নিচে এর কিছু উপকারিতা দেওয়া হলো:
১. প্রোটিন সমৃদ্ধ:
মাছের মাথায় উচ্চমানের প্রোটিন থাকে যা শরীরের কোষ ও পেশি গঠনে সহায়ক। প্রোটিন আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়।
২. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:
মাছের মাথায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। এটি কোলেস্টেরল কমাতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
৩. ব্রেন ফাংশনের উন্নতি:
মাছের মাথায় থাকা ওমেগা-৩ এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
৪. ভিটামিন ও মিনারেলস:
মাছের মাথায় ভিটামিন এ, ডি, ই এবং বি কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলস থাকে। এগুলো ত্বক, চোখ, হাড় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণ:
মাছের মাথায় ক্যালরি কম এবং প্রোটিন বেশি থাকে, যা ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এটি খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাবারের প্রবণতা কমে।
৬. হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা:
মাছের মাথায় থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। এটি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা হার্টের জন্য ভালো।
৭. হাড়ের গঠন শক্তিশালী:
মাছের মাথায় থাকা ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়ের গঠন এবং শক্তি বাড়াতে সহায়ক। এটি অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
মাছের মাথার কালিয়া নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে এই পুষ্টিগুণগুলো পাওয়া সম্ভব, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।